গুগলে র্যাঙ্ক পাওয়ার জন্য আমরা কত কিছুই না করি। দিন যত যাচ্ছে গুগলে র্যাঙ্ক পাওয়া আস্তে আস্তে ততই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গুগল নতুন নতুন আপডেট রিলিজ করছে আর পুরানো টেকনিক যেগুলা আগে কাজ করত সেগুলা হয়ত আর কাজ করছে নাহ।
তো গুগলে র্যাঙ্ক পেতে হলে আপনাকে সবসময় থাকতে হবে আপডেট। নতুন নতুন আপডেটের সাথে মানিয়ে নিয়ে নতুন নতুন ট্রিক্স বের করতে হবে যা আপনাকে গুগলে র্যাঙ্ক পেতে সাহায্য করবে।
কিন্তু এমন কিছু জিনিস থাকে যা মোটামোটি স্থায়ী বলা চলে। যেমন ব্যাক্লিংকের গুরুত্ব, অন পেজের সঠিক ব্যবহার ইত্যাদি। তো এগুলা রিলেটেড তিনটি টিপস আজকে শেয়ার করতে চাই, যেগুলি অদুর ভবিষ্যতেও এসইওর জন্য কার্যকর থাকবে আশা করা যায় –
১. আপনার প্রতিযোগীরা গুগলে র্যাংক পেতে কোন সোর্স থেকে ব্যাকলিংক নেয় সেগুলো অনুকরন করুন
শুধু শুধু কষ্ট করে নতুন নতুন সোর্স থেকে ব্যাকলিংক কালেক্ট করার কোন দরকার নেই । এতে আপনার সময় নষ্ট হবে । আপনার প্রতিযোগীদের ওয়েবসাইট গুলো লক্ষ্য করুন । তারা কোন সোর্স থেকে ব্যাকলিংক নিয়ে গুগলে র্যাংক পেয়েছে সেটা ফলো করুন ।
১ম ধাপ: আপনি যে কী-ওয়ার্ডটি র্যাংক করতে চান সেটা লিখে গুগলে সার্চ করুন এবং যে ওয়েবসাইট প্রথমে এসেছে সেটা নোট করে রাখুন ।
২য় ধাপ: আপনার কী-ওয়ার্ড সার্চ করার পর আপনি যে পেইজ গুলো পেয়েছেন সেই পেইজের ব্যাকলিংক গুলোর একটা লিস্ট করে ফেলুন । (ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক চেক করার জন্য এইটা SMALL SEO TOOLS ব্যাবহার করতে পারেন । এবং এই রকম আরো অনেক ফ্রী টুলস আছে । তবে পেইড টুলস গুলো আপনাকে নিঁখুত ফলাফল দিবে । যেমন AHREFS অথবা SEMRush).
৩য় ধাপ: আপনি যে ব্যাকলিংক গুলোর লিস্ট করেছেন, সেগুলো থেকে দেখে নিন কোন ব্যাকলিংকগুলো অথরিটি সাইট থেকে এসেছে । ( ডোমেইন রেটিং অনুযায়ী ফিল্টার করে ফেলুন)
৪র্থ ধাপ: এইবার আপনার কাজ হলো বাছাই করে বের করা, তাদের ওয়েবসাইটে কি কি ফিচার আছে যেটা আপনার ওয়েবসাইটে নেই । সেই ফিচার গুলো আপনার ওয়েবসাইটে পুরন করার চেষ্টা করুন । আপনি ব্যাকলিংক দিয়ে শুরু করতে পারেন । আপনিতো আগেই ব্যাকলিংকগুলোর লিস্ট করে ফেলেছেন । এইবার দেখুন কোন লিংকগুলো পেতে আপনার সহজ হবে এবং সেগুলো থেকে শুরু করুন।
৫ম ধাপ: আপনার কী-ওয়ার্ড সার্চে যে সাইট গুলো দ্বিতীয় তৃতীয় বা দশম স্থানে আছে সবগুলোর ক্ষেত্রেই একই কাজ গুলো করুন । মানে আপনি সবগুলোরই ব্যাকলিংক সংগ্রহ করুন । এইভাবে দেখবেন আপনার নিশ সম্পর্কিত প্রচুর ব্যাকলিংক পাবেন এবং আপনার কী-ওয়ার্ড র্যাংক করানোর ক্ষেত্রে বসে বসে আর ব্যাকলিংক খুঁজতে হবে না ।
আর এইভাবে কাজ করলে আপনার কাজগুলোর মধ্যে একটা শৃংখলতা বজায় থাকবে । নাহলে আপনি চিন্তা করে দেখুন ব্যাকলিংক খুঁজতে খুঁজতেই আপনি বিরক্ত হয়ে যাবেন ।
এগুলি করার পরেও যদি আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকে তাহলে অবশ্যই নতুন সোর্স এর সন্ধান করতে পারেন। কারণ শীর্ষে যেতে গেলে কিছু না কিছু তো ইউনিক দরকার। তবে প্রাথমিকভাবে লিঙ্ক বিল্ডীং করার জন্য এই ট্রিক্সটি ফলো করুন, এতে করে আপনার অনেক সময় বাচবে এবং দ্রুত কিছু লিংক পাবেন।
২. আপনার প্রতিযোগীদের “Linkable assets” কি আছে সেটা অনুসরন করুন ।
“Linkable assets” জিনিস্টা কি জানা আছে? বিষয়টা কি আমরা সেটা আগে একটু জেনে নিই ।
“Linkable assets” হলো আপনার ওয়েবসাইটের সবচেয়ে আকর্ষনীয় এবং তথ্যবহুল পেইজগুলোকে বুঝায় । আপনি এমন ভাবে পেইজগুলো তৈরি করবেন যেন অন্যরাও আপনার এই পেইজের লিংক দিয়ে কোথাও উদাহরন দিতে পারে ।
কিন্তু একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে, এই পেইজগুলো তৈরি করা কিছুটা কঠিন এবং বেশ সময় নিয়ে এই পেইজ তৈরি করতে হবে । ওয়েবসাইট র্যাংক করানোর ক্ষেত্রে এই পেইজগুলো বেশ কাজে লাগে ।
তো চলুন দেখে নিই কিভাবে এইরকম একটা পেইজ আমরা তৈরি করতে পারি ।
আপনি এই ক্ষেত্রে আপনার প্রতিযোগীদের ওয়েবসাইট নিয়ে কিছুটা সময় ব্যায় করতে হবে ।
১ম ধাপ: আপনার প্রতিযোগী ওয়েবসাইটের কোন পেইজে সবচেয়ে বেশি পরিমান ব্যাকলিংক আছে সেটা খুঁজে বের করুন । এবং সেই ব্যাকলিংকগুলোর একটা লিস্ট করে ফেলুন । (এটা বের করার জন্য আপনি ভালো কোন সাইট এক্সপ্লোরার ব্যাবহার করতে পারেন )।
২য় ধাপ: আপনার পেইজ খোঁজা হলে এইবার ভালো করে দেখুন এই পেইজে এমন কি আছে, যে কারনে অন্যারা তাকে ব্যাকলিংক দিচ্ছে ? সময় নিয়ে পেইজটা পর্যবেক্ষন করুন । যে বিষয়গুলো পেইজটাকে গুরুত্বপুর্ন করে তুলেছে সেগুলো আলাদা ভাবে টুকে রাখুন । এইবার আপনার কাজ হলো আপনি আপনার ওয়েবসাইটে যে পেইজকে “Linkable assets” করতে চান সেই পেইজটাকে ভালো রিসোর্স দিয়ে পরিপুর্ন করে ফেলুন । অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন আপনার রিসোর্স গুলো অবশ্যই জন্য আপনার প্রতিযোগীর চেয়ে ভালো হয়।
৩য় ধাপ: প্রথম ধাপ অনুসরন করলে আপনার এতক্ষনে এইটা বুঝে ফেলার কথা কারা আপনার প্রতিযোগীকে ব্যাকলিংক দিয়েছিল । এইবার আপনার কাজ হলো আপনার “Linkable assets” তাদের কে দেখানো । আপনার “Linkable assets” যত বেশি আকর্ষনিয় এবং অসাধারন করে তুলতে পারবেন তত বেশি তারা আপনাকে লিংক দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হবে ।
৪র্থ ধাপ: যত বেশি সম্ভব এই “Linkable assets” তৈরি করুন । শুধু পুরো একটা পেইজকেই যে “Linkable assets” বুঝায় সেটা না । আপনার একটা চমৎকার আর্টিকেলও হতে পারে একটা “Linkable assets” । এইভাবে প্রচুর পরিমানে “Linkable assets” তৈরি করলে আপনার আর ব্যাকলিংক নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না । আপনার ওয়েবসাইট এমনিতেই ব্যাকলিংক পেতে থাকবে ।
৩. লিংক পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি এইরকম কন্টেন্ট পাবলিশ করুন
আপনি যদি নিশ্চিত না হন যে আপনার আর্টিকেল কি ব্যাকলিংক পাওয়ার যোগ্য কি না বা ব্যাকলিংক পাবে কি না, তাহলে এই ধরনের আর্টিকেল পাবলিশ করার কোন কারনই নেই ।
তো, আপনি যদি বুঝতে না পারেন কেমন আর্টিকেল পাবলিশ করা উচিৎ তাহলে কিছু বুদ্ধি খরচ করতে হবে ।
১ম ধাপ: আপনি যে ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করতে চান সেটার জন্য কয়েকটা কী-ওয়ার্ড বাছাই করুন ।
২য় ধাপ: আপনি যে কী-ওয়ার্ড গুলো নির্বাচন করেছেন এইবার সেগুলো গুগল সার্চ করুন । যে পেইজ এবং আর্টিকেলগুলো পেয়েছেন এইবার সেগুলোর ব্যাকলিংক সংখ্যা অনুযায়ী একটা লিস্ট করুন । ( আপনি এই ক্ষেত্রে কন্টেন্ট এক্সপ্লোরার ব্যাবহার করতে পারেন )
৩য় ধাপ: এইবার আপনার কাজ হলো আর্টিকেল গুলো ভালো করে পর্যবেক্ষন করা, কোন আর্টিকেল গুলো সবচেয়ে বেশি ব্যাকলিংক পেয়েছে এবং সেই ব্যাকলিংক গুলো লিস্ট করুন । আর নোট করে রাখুন আর্টিকেলটিতে কি এমন বৈশিষ্ট্য আছে যার কারনে সে এত ব্যাকলিংক পেল ।
৪র্থ ধাপ: আপনি এতক্ষন অনেক কষ্ট করলেন । এইবার আপনি যা যা বের করেছেন সব কিছু নিয়ে বসুন এবং চিন্তা করুন আপনার প্রতিযোগীর চেয়ে ভালো আর্টিকেল কিভাবে তৈরি করা যায় । আর্টিকেল তৈরি হয়ে গেলে আপনার কাজ হলো প্রতিযোগীর আর্টিকেল থেকে পাওয়া ব্যাকলিংকগুলোর কাছে পৌঁছানো । তাদেরকে আপনার আর্টিকেল দেখান । তাদের কাছ থেকে সাথে সাথে লিংক পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও আছে ।
সবশেষে একটা কথা বলতে পারি যে, গুগলের কাছে আর কোন কিছুর দাম থাকুক বা না থাকুক, ব্যাক্লিংকের দাম সবসময়ই থাকবে। তাই আপনি যত স্মার্ট উপায়ে কম সময় ও অর্থ খরচ করে ভাল ব্যাক্লিঙ্ক পেতে শিখবেন, আপনার গুগলে র্যাঙ্ক করা ততই ইজি হবে।
তো এই স্মার্ট তিনিটি আইডিয়া কাজে লাগান এবং কমেন্টে জানাবেন আইডিয়া গুলি কেমন লাগলো!
One Response
আইডিয়াগুলো খুব ভালো লাগছে। এগুলো আমার ব্লগে ব্যবহার করলে অনেক উপকার হবে আশা করি। ধন্যবাদ।