আপনি কি জানেন, বিশ্বব্যাপী ৪০% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ই-কমার্স স্টোর থেকে পণ্য কিনেছেন?
কেনাকাটার সহজ অভিজ্ঞতার জন্যে মানুষ অনলাইনে পণ্য কেনার দিকে ক্রমেই ঝুকে পড়ছে। আর ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও বড় স্ক্রিনের মোবাইলের বদৌলতে এই প্রক্রিয়া হয়ে উঠছে আরো সহজ।
ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্যে যে ব্যাপক সুযোগ তৈরি করছে তা নিয়ে আপনি এখনও সন্তুষ্ট নন?
তাহলে ফরেস্টার গবেষণা ২০১৬ রিপোর্টের ফলাফলগুলো দেখুন :
- আশা করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে অনলাইন বিক্রির গড় হার হবে ৯.৩২% এবং ২০২০ সালের মধ্যে ইউএস ভোক্তা ব্যয় পৌঁছাবে ৫২৩ বিলিয়ন ডলারে।
- মূলত মোবাইলের সাহায্যে ই-কমার্স ব্যবসা ও ই-কমার্স স্টোরগুলোতে ব্রাউজিং ও অনলাইন ক্রয়ের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভোক্তা সংখ্যা বেড়ে ২৭০ মিলিয়নে দাঁড়াবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আর ই-কমার্স ওয়েবসাইটের এই প্রসার নির্ভর করছে আমাদের ওপরেই।
যদি নিজস্ব পণ্য বিক্রি করার জন্যে একটা ই-কমার্স স্টোর তৈরির স্বপ্ন আপনি সবসময়ই দেখে থাকেন, তাহলে এখনই সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবার উপযুক্ত সময়।
সবথেকে স্বস্তিকর হলো, টেকনোলজি সংক্রান্ত যেকোন সমস্যা সমাধানের জন্যে আপনার কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না, এর জন্যে রয়েছে অসংখ্য বিজনেস টুল। আপনি তাই আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ শুধুমাত্র একটি ব্রান্ড নির্মাণে এবং বাস্তব ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেই দিতে পারবেন।
চলুন একটি ই-কমার্স ব্যবসা বা ই-কমার্স স্টোর শুরু করার সুস্পষ্ট ক্ষেত্রগুলো দেখে আসা যাক:
ই-বে ও আ্যমাজনের মতো কেনাবেচার সাইটগুলোতে বিক্রেতা হয়ে ওঠা।
আপনি এই বিশাল ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্রান্ডগুলো থেকে একটি লাভজনক আয় উপার্জন করতে পারেন, তবে এখানে বিক্রি করতে পারাটা বেশ কঠিন। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনার মতো একই পণ্য বিক্রেতা ও পুনর্বিক্রেতা থেকে আপনি নিজেকে আলাদা করে তুলে ধরতে ঝামেলায় পড়বেন।
সেজন্যে আমি একটি ব্যক্তিগত ই-কমার্স ব্রান্ড গড়ে তুলতে জোর দিচ্ছি যেটা ভালো গ্রাহক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে। এটা ঠিক যে, আপনি হয়তো আ্যমাজনের মতো এত বিশাল হয়ে উঠতে পারবেন না, কিন্তু অন্তত আপনাকে শুধুমাত্র দামের ওপর নির্ভর করে টিকে থাকতে হবে না।
আপনার পণ্য নিয়ে সন্তুষ্ট ও আপনার সাথে ব্যক্তিগতভাবে সম্পর্কিত- এমন ক্রেতা কীভাবে আপনার ক্ষুদ্র ব্যবসাকে প্রভাবিত করতে পারে?
লক্ষাধিক মানুষ আপনার ই-কমার্স ওয়েব পণ্যর জন্য লঞ্চিংয়ের আগ থেকেই অপেক্ষা করতে পারে। শুধু তাই নয়, এই সন্তুষ্ট গ্রাহকেরা আপনার পণ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচক রিভিউ শেয়ার করবে যাতে আপনার ই-কমার্স স্টোরের মার্কেটিং হয়ে যাবে বিনামূল্যেই ।
এক্ষেত্রে গ্লসিয়ারের এমিলি উইজ একজন দারুণ উদাহরণ হতে পারেন। অনলাইন খুচরা বিক্রেতা হিসেবে তার প্রথম পণ্যটি বাজারে আনার আগেই তার ব্যবসায়িক ইন্সটাগ্রাম একাউন্টটির ফলোয়ার বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৫,০০০ এ। আমি এখানে এমিলির বিস্তারিত গল্পটি তুলে ধরেছি।
একইভাবে আপনি হয়তো ডলার শেভ ক্লাবের (ডিএসসি) হাস্যরসাত্মক বিজ্ঞাপনটি দেখে থাকবেন। ডিএসসি একটি কনজিউমার ফোকাসড ব্রান্ড হওয়ার লক্ষ্যে অটল ছিল। পরে তারা এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে ইউনিলিভার ১ বিলিয়ন ডলারে তাদের কিনে নেয়।
আপনি যদি শূন্য থেকে একটি সফল ই-কমার্স ব্রান্ড গড়ে তুলতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে। আপনাকে সঠিক উপায়গুলো জানানোর জন্যে আমি ই-কমার্স স্টোর, কেস স্টাডি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমবিষয়ক পরামর্শ ও কৌশলের উদাহরণ সম্পর্কে আলোচনা করব।
এখানে একটি ই-কমার্স স্টোর তৈরির টিপস দেয়া হলো যা বছরে ১ বিলিয়ন ডলার রেভিনিউ অর্জন করতে পারে:
টার্গেট অডিয়েন্সের সামনে নিজেকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করুন
যদিও আমি আপনাকে শূণ্য থেকে একটি সফল ক্ষুদ্র ব্যবসা গড়ে তোলা নিয়ে আশা দেখিয়েছি, তবে সত্যি বলতে সঠিক মার্কেটিং কৌশল খুঁজে পাওয়াটা কোন সহজ ব্যাপার না।
এবং যদি আপনি মার্কেটে নিজের পণ্য বা সেবা নিয়ে একটা ইউনিক অবস্থান তৈরি করতে না পারেন, ক্রেতারা আপনার ই-কমার্স বিজনেসের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখাবেন না।
১৮,০০০ ই-কমার্স সাইট বিশ্লেষণ করে Yotpo জানতে পেরেছে একটি গড়পরতা ই-কমার্স স্টোর সাইট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৫০০ জন ফ্যান পেতেও ব্যর্থ হয়।
আমি জানি আপনি হয়তো ভাবছেন সামাজিক মাধ্যমের একটি ‘লাইক’ একটি ভ্যানিটি ম্যাট্রিক মাত্র। কিন্তু এই লাইক সংখ্যাটি নির্দেশ করে আপনি এই ১০০০ জনকে সত্যিকার অর্থে নিজের ব্যবসার ব্যপারে আগ্রহী করতে পেরেছেন। আর তারা আপনাকে ভালবাসে, আপনার সব পণ্য কেনে এবং আপনার স্টোরটি সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলে ।
একটি ইউএসপি (ইউনিজ সেলিং প্রপোজিশন) ছাড়া এরকম ফ্যান তৈরি করা প্রায় অসম্ভব।
আমাজনের সাথে আপনার দূরত্ব শুধু একটা ক্লিকের। খুব সম্ভবত এই ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্মগুলো আপনার ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে কম দামে পণ্য বিক্রি করবে। তাই টার্গেট অডিয়েন্সকে আপনার দিকে আকৃষ্ট করার জন্যে তাদের সাথে আপনার একটি মানসিক সম্পর্ক গড়ে নিতে হবে।
আপনার পণ্য যে সমস্যা সমাধান করতে চাচ্ছে তার সাথে যদি আপনার ক্রেতারা নিজেদের জীবনকে মেলাতে পারে তাহলে মার্কেটিং নেটওয়ার্কে আপনার পণ্য ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা আরো বেড়ে যায়।
উদাহরণস্বরূপ ডলার শেভ ক্লাবকে নেয়া যেতে পারে। তাদের প্রথম ভিডিওটিতে একটি দারুণ গল্পকে মজাদার ভাবে দেখানো হয়েছে যা কিনা আবার তাদের ব্রান্ডের সাথে সম্পর্কিত।
এই মার্কেটিং কৌশলটি ডিএসসিকে দ্রুত জিলেটের মতো প্রতিযোগিদের থেকে তাদের আলাদা করে দেয়। মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, ডিএসসি তাদের সাশ্রয়ী মূল্যের রেজার অফার করছে ।
এটি অপ্রয়োজনীয় ফিচারওয়ালা কোন শৌখিন পণ্য নয়, কিন্তু এটি ঠিকমতো কাজ করে।
নিচের কথাগুলোর মাধ্যমে তারা তাদের পণ্য ব্যবহারের লাভ দারুণভাবে উপস্থাপন করেছে :
- “প্রতিটি রেজরে আছে স্টেইনলেস স্টিলের ব্লেড, একটি এলোভেরা লুব্রিকেশন স্ট্রিপ ও পিভট হেড।”
- “আপনি কি ব্রান্ডেড রেজরের জন্যে প্রতি মাসে ২০ ডলার খরচ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?”
- “আপনি কি মনে করেন আপনার রেজরে একটি ভাইব্রেটিং হ্যান্ডেল, ফ্ল্যাশলাইট, ব্যাকস্ক্র্যাচার ও ১০টি ব্লেড দরকার?”
আর এই ভিডিও লঞ্চের ফলাফল কী হয়েছিলো তা তো আমরা সবাই জানি।
মানুষ মাইকেল দুবিনের সাথে তুলনা করে বুঝতে পারে ডিএসসি তাদের জন্যে বেশি কাজের । ডিএসসি দুইদিনের মধ্যে ১২,০০০ গ্রাহক পেয়ে যায় ও তাদের সামাজিক মাধ্যমগুলো সকলের মনোযোগ কেড়ে নেয়। সংক্ষেপে বলতে গেলে অনলাইন ব্যবসাটিকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, এমনকি সার্চ ইঞ্জিনগুলোও ডিএসসিকে আলাদাভাবে চিনে নেয়।
আপনার জন্যে প্রথম কাজ-
সিদ্ধান্ত নিন আপনি আপনার গ্রাহকদের জন্যে কী হতে চান আর এমন একটি দারুণ ব্রান্ড স্টোরি তৈরি করুন যা তাদের আকৃষ্ট করবে।
এটা অন্যকিছুকে না বলার মাধ্যমে হতে পারে। খেয়াল রাখবেন যেন আপনার ম্যাসেজটি সকলের মাঝে আগ্রহ তৈরি করে, আর এর জন্যে বেশ ভালো একটা সময় দিন।
এই আর্টিকেলের প্রথম তিনটি ধাপ আপনাকে আপনার টার্গেট অডিয়েন্সকে নির্দিষ্ট করতে ও তাদের পছন্দের অনলাইন খুচরা বিক্রেতা হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
এরিক বিয়ার্ডসব্র্যান্ডের আয়কে প্রতি মাসে ১২০ হাজার ডলারের ওপরে নিয়ে গেছেন। আর একটি সফল ব্রান্ড গড়ে তোলার জন্যে তার একটি সরল পরামর্শ হলো, ‘কথাটি ছড়িয়ে দিন’।
আপনি যদি নিজের জীবনযাপনকে ঘিরে আপনার ব্রান্ডের প্রতিচ্ছবি তৈরি করতে পারেন, সেটা আপনাকে একজন বিক্রেতা থেকে বেশি কিছুতে পরিণত করবে। তাছাড়া নিজের ব্রান্ডের প্রতি আপনার এই কমিটমেন্টের জন্যে ক্রেতারা আপনাকে অন্য সবার থেকে আলাদা চোখে দেখবে। আর এটাকে ঠিক কাজের মতোও মনে হবে না কারণ আপনার বিক্রিত পণ্যের প্রতি আপনি প্রকৃতভাবেই আগ্রহী।
এরিক তার দাঁড়ি ও এর পরিচর্যার ভিডিও করতে ভালবাসেন। তাই কোন সন্দেহ নেই তিনি নিচের মতো কমেন্ট পান যেখানে বলা হয় তার ব্রান্ডটিকে তার নিজের প্রতিচ্ছবি বলেই মনে হয়।
প্রকৃতপক্ষে, বিয়ার্ডব্রান্ডের গ্রাহকরা বলেন কোম্পানির দর্শন তাদের পণ্য কেনার পেছনে মূল কারণ।
এটি প্রতিটি সফল ব্রান্ডেরই অপরিহার্য উপাদান।
ব্রান্ডকে অপমৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার ক্ষেত্রে একটি মারাত্মক ভুল হলো ধারাবাহিকতার অভাব। এটি আপনার কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে আপনার পণ্য এবং সামাজিক নেটওয়ার্কে আপনার উপস্থিতি, সবকিছুর জন্যেই প্রযোজ্য।
একবার যখন আপনি আপনার ম্যাসেজ তৈরি করেছেন, এর সাথে লেগে থাকা ও সব মার্কেটিং এক্টিভিটিজে এর ধারাবাহিকতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার ডিজাইন, লোগো ও এমন অন্যান্য ব্যাপারগুলোকে আপনার ব্র্যান্ডের গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে । মূলত আপনার ওয়েবসাইট, সামাজিক নেটওয়ার্ক চ্যানেল, পণ্য, ইমেইল ও বিজ্ঞাপনগুলো যেন আপনার ব্রান্ডের মতাদর্শের সাথে সম্পর্কিত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে ।
একটি সুসংগত ব্রান্ড ইমেজ বজায় রাখার জন্যে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হলো একটি সুস্পষ্ট কালার প্যালেট ও ডিজাইন। কারণ রঙ আপনার গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক কথা বলে এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতাকেও করে তোলে স্বস্তিকর । এখানে আবেগের সাথে সংযুক্ত রঙগুলোকে একটি কালার প্যালেটের সাহায্য দেখানো হলো-
বিয়ার্ডসব্রান্ডের একটি সুস্পষ্ট কালার প্যালেট আছে। এরিক এটিকে সহজ রেখেছেন এবং এতে প্রাথমিক রং হিসেবে সাদা কালো ও সেকেন্ডারি রঙ হিসেবে সায়ান রয়েছে।
এরিক বলেন তারা ‘আর্বান বিয়ার্ডসম্যান’ কথাটি নির্ধারণ করেছেন যাতে করে স্টাইল ও পরিচর্যা করতে যারা পছন্দ করে তাদের আকর্ষণ করা যায়। শুধুমাত্র বাইকার ও হিপ্পিদের দাঁড়ি আছে, এই ধারণা তারা ভাংতে চেয়েছিলেন।
আপনি যদি তাদের এবাউট পেজ, ট্যাগলাইন ও অন্যান্য ব্রান্ডিইং ম্যাটেরিয়াল দেখেন, তবে দেখতে পাবেন সেখানে এই কথাটি ও তাদের দর্শনের ছাপ আছে।
উদাহরণস্বরূপ এখানে তাদের ভিশন স্টেটমেন্ট ও মিশন স্টেটমেন্টগুলো দেয়া হলো-
ভিশন স্টেটমেন্ট : বিয়ার্ডসম্যানদের প্রতি সমাজের দৃষ্টি পাল্টানো।
মিশন স্টেটমেন্ট : আর্বান বিয়ার্ডসম্যানদের জন্যে স্টাইলের ক্ষেত্র বাড়ানো।
এরিক একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডিজাইনার। তিনি তার ব্রান্ডটিকে ঠিক কীভাবে চিত্রিত করতে চান এ নিয়ে তার স্পষ্ট ধারণা ছিলো।
মনে রাখবেন আপনি সহজে বাজারে ফিভেরর এর মতো ভালো ডিজাইনার সস্তায় পাবেন না। এ ব্যপারে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে প্রস্তুত থাকুন।
কিন্তু একবার আপনি একজন ভালো ডিজাইনার পেয়ে গেলে তিনি আপনাকে আপনার ব্যাবসায়িক দর্শনের ওপর ভিত্তি করে ব্রান্ড গাইডলাইন তৈরি করতে সাহায্য করবেন, আর তাতে আপনার ক্ষুদ্র ব্যবসাটি সঠিক ট্র্যাকে রাখা সহজ হবে।
আপনি যখন একবার বিক্রয়কর্মী, মার্কেটার ও কাস্টোমার সার্ভিস এক্সিকিউটিভ নিযুক্ত করবেন, তখন আপনাকে এমন একটি পরিবেশ বজায় রাখতে হবে যেন সেটা আপনার ব্যবসার দর্শন ও মতাদর্শকে প্রতিফলিত করে। এছাড়াও আপনার কর্মীরা যেন গ্রাহকদের সাথে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথাবার্তা বলতে পারে সেদিকেও নজর দিতে হবে।
আপনার গ্রাহকদের জন্যে একটি দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করুন
মনে আছে আমি বলেছিলাম আপনি দামের ক্ষেত্রে বড় প্ল্যাটফর্মগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারবেন না? এর জন্যে আপনার দরকার একটি স্পষ্ট ও বিশেষ ইউএসপি আর আকর্ষণীয় ব্রান্ড স্টোরি।
এছাড়াও আপনি আপনার পণ্য প্যাকেজিংকে বিশেষায়িত করে এবং আপনার গ্রাহকদের স্পেশাল অনুভব করিয়েও আস্থাশীল গ্রাহক তৈরি করতে পারেন । পুরো ব্যপারটাই আসলে আপনি কিভাবে তাদের আপনার পণ্যের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে পারছেন তা নিয়ে ।
ডলার শেভিং ক্লাব তাদের গ্রাহকদের জন্যে একটি প্রিমিয়াম আনবক্সিং এক্সপেরিয়েন্স রেখেছে। তারা তাদের গ্রাহকদের সাথে এমনভাবে আচরণ করে যেন তারা একটি উচ্চমানের ক্লাবের সদস্য।
তারা আপনাকে একটি রঙ্গীন পোস্টকার্ড ও ফ্রি ড্রিঙ্ক দিয়ে স্বাগত জানাবে।
পোস্টকার্ডের পেছনের অংশটি দেখে আপনি নিজেকে একটি এলিট মুভমেন্টের অংশ বলে মনে করবেন। এছাড়া এতে আপনার সাবস্ক্রিপশন পরিবর্তনের ও তাদের সামাজিক মাধ্যমে অনুসরণের নিয়ামবলী আছে।
এটি তাদের সম্পূর্ণ ওয়েলকাম প্যাকেজ।
বিশ্বজুড়ে মানুষ তাদের ডিএসসি আনবক্সিংয়ের অভিজ্ঞতা ইন্টারনেটে শেয়ার করছেন। উপরের সব ছবিগুলো জনাথন কলম্যানের লেখা একটি ব্লগ থেকে নেয়া হয়েছে। এই ভিডিওতে অস্ট্রেলিয়ার একজনের একটি আনবক্সিংয়ের অভিজ্ঞতা দেখা যায়।
চিন্তা করুন এর মাধ্যমে বিনামূল্যে ডিএসসির কতটা মার্কেটিং হচ্ছে। আসলে, এটা শুধু ডিএসসি না বরং ২০১০ থেকে আনবক্সিং ভিডিওগুলো অনেক বেড়ে গেছে। মানুষ কোন ব্রান্ডের প্রথম ইমপ্রেশন সকলের সাথে শেয়ার করতে চায়।
ডটকম ডিস্ট্রিবিউশন দেখায়, যেসব অনলাইন মার্চেন্ট প্রিমিয়াম প্যাকেজিং দেয় ৫২% ভোক্তা তাদের থেকে পুনরায় পণ্য কিনতে আগ্রহী। একটু ভিন্নধর্মী প্যাকেজিং সামাজিক নেটওয়ার্ক পাবলিসিটির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আমি প্রথমে শিপিং ও কাস্টম প্যাকেজিং চার্জ হিসাব করে তারপর কাস্টম প্যাকেজিং বেছে নেয়ার পরামর্শ দেব।
যদি আপনি কাস্টম প্যাকেজিং করতে চান তাহলে এখানে শপিফাইয়ের একটি গাইড আছে যার সাহায্য আপনি আপনার ক্রেতাদের জন্যে একটি অন্যরকম অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে পারেন।
গ্রাহক আকৃষ্ট করার আরো দুইটি কার্যকরী উপায় হলো লয়েলিটি প্রোগ্রাম ও ডিস্কাউন্ট অফার দেয়া।
প্রায় ৫০,০০০ ডিএসসি গ্রাহক তাদের বন্ধুদের ডিএসসি পণ্য ব্যবহার করতে বলেন। ডিএসসি এই মৌখিক মার্কেটিং পাওয়ার জন্যে তাদের গ্রাহকদের ওয়েলকাম মেইলের সাথে ফ্রি মাস ও ক্রেডিট দেয়।
আপনার ব্যবসা শুরুর আগে কিছু টুকিটাকি
এখন পর্যন্ত আপনি ই-কমার্স ব্রান্ড নির্মাণের জন্যে উঁচুস্তরের কৌশলগুলো দেখেছেন। এখন গোড়ার দিকের কৌশল নিয়ে কথা বলা যাক। বেশিরভাগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা গ্রাহক পান ফেসবুকে। তাই আমি পরামর্শ দেব ফেসবুক বিজ্ঞাপন দিয়ে শুরু করুন ও এই প্ল্যাটফর্মের শক্তিশালী টার্গেটকে ব্যবহার করুন। এছাড়াও আপনি বিশেষভাবে ই-কমার্স ব্যবসার জন্যে ফেসবুক এডসম্পর্কিত বিস্তারিত গাইডটি দেখতে পারেন। একবার ফেসবুকে আপনার বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার করার পর আপনি ইন্সটাগ্রাম ও পিন্টারেস্টের মতো ভিজ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মগুলো বেছে নিন।
এসব প্ল্যাটফর্মে গ্রাহকরা হাই-কোয়ালিটি ভিজ্যুয়াল বিজ্ঞাপন আশা করে। আর এই প্ল্যাটফর্মে শপিংপ্রেমীদের আনাগোনা খুব বেশি। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে বাই বাটন ও নেটিভ কমার্স অনুশীলন করতেও ভুলবেন না।
সবশেষে, আমি পরামর্শ দেব আপনি যে ক্ষেত্রে কাজ করতে চান সেখানে প্রভাবশালীদের খুঁজে বের করুন ও তাঁদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখুন।
ইন্টারনেট আপনার পণ্য বিক্রি ও সফল ব্যবসা গড়ে তোলার জন্যে একটি চমৎকার উপায়। কিন্তু বেশিরভাগ কোম্পানি কম সময়ে সাফল্য পেতে গিয়ে সাফল্যের মুখই দেখতে পায় না। একটি ব্রান্ডিইং কৌশল তৈরি ও এটি ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ একটি টেকসই ব্যবসা তৈরির জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই আর্টিকেলএ আমি শূণ্য থেকে নিজস্ব ব্রান্ড তৈরি উদাহরণ ও কৌশল শেয়ার করেছি। আপনি যদি সবসময়ই একটি ই-কমার্স ব্যবসা তৈরি করতে চান, তাহলে এখনই শুরু করে দিন।
হোস্ট বাংলা আপনার বিজনেস এর জন্য ই-কমার্স সাইট তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে এবং শকল প্রকার অনলাইন মার্কেটিং এ সাহায্য করতে পারে। আপনি যদি আগ্রহী হন তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন এই নাম্বার এঃ ০১৭৫৭৬০২০০০ অথবা ইমেইল করুন [email protected]
One Response
আপনার ব্যবসা শুরুর পরামর্শ গুলো আমি অনুশীলন করব।