আগের আর্টিকেলে ২৫ টি ইফেক্টিভ অন পেজ এস ই ও নিয়ে কথা বলেছিলাম। সেগুলি আপনার সাইটে ইমপ্লিমেন্ট করেছেন কি?
তো আরো অনেক কিছু বাদ ছিল যেগুলি নিয়ে ইচ্ছা ছিল আরো একটি আর্টিকেল লেখার। তো চলে এলাম বাদ পরা পয়েন্ট গুলি নিয়ে কথা বলতে। চলুন শুরূ করা যাক –
(যেহেতু আগের আর্টিকেলে ২৫ টি টিপস দিয়েছিলাম, তাই আজ ২৬ থেকে শুরু করছি)
২৬. ওপেন ইন নিউ ট্যাব আউটবাউন্ড লিংক দিতে চিন্তিত হবার কিছু নেই। আমি অনেক অথরিটি সাইটকে দেখেছি, খোদ্ অ্যাফিলিয়েট লিংকগুলোকেও এভাবে রাখে। তারা তো ডুবে যাচ্ছে না।
২৭. এভাবে, লিংকিং করার জন্য যখন পুরনো আরটিকেল ধরবেন, তখন এডিট শেষে লক্ষ্য রাখুন যেন ‘লাস্ট এডিটেড অমুক তারিখ’ দেখায়। এটা ভয়ানক হেল্পফুল।
২৮. চাইলে পাবলিশ ডেটও মোস্ট রিসেন্টে চেঞ্জ করে দিতে পারেন। ঠকা খাবার মনে হয় সম্ভাবনা নেই, কারণ বড় মহারথীরাও এহেন অপকর্ম করে বিজয় নিশান ওড়াচ্ছে। অল্প সাবানে অত্যধিক ফেনা।
২৯. বিশেষ করে পাতাটা যখন এখন একটু ঘষামাজাই করবেন, যে পণ্য বা বিষয় নিয়ে করা হয়েছে পাতাটা, সে পণ্য বা বিষয় নিয়ে আমাজনে একটু দেখে আসলেন। অ্যাবোভ দ্য ফোল্ড দু একটা রিসেন্ট অ্যারাইভাল বা রিসেন্ট বেস্ট সেলারকে সেখানে দু-এক বাক্যে বর্ণনা দিয়ে লিস্টেড করলেন। তাতে করে পুরো আরটিকেলটাই নতুন হয়ে যাবে।
৩০. যেটায় টেবল অভ কন্টেন্ট দেয়া নেই, দিয়ে দিলেন। টেবল অভ কন্টেন্ট দেয়ার সময় শিবের গীত পুরোটা না লিখে গীতের টাইটেল লিখে দিলেন। যেমন: একেকটা টাইটেলের নাম ছিল এমন:
দ্য ভেরি বেস্ট ঠান্ডা রসমালাই রিভিউ
দ্য ভেরি বেস্ট গরম রসমালাই রিভিউ
দ্য অরিজিনাল কুমিল্লা মাতৃভান্ডার রসমালাই রিভিউ
এগুলা মূলত লেখা দরকার আছে। কারণ, গুগল চালাক হয়েছে। চালাক হয়নাই মরার বিং। তার জন্য ফ্রেজাল ম্যাচের জন্য দরকার। কিন্তু টেবল অভ কন্টেন্টে এতটা দরকার কী? সেখানে এই তিনটাকে লিংকিং করলেন এভাবে:
ঠান্ডা রসমালাই
গরম রসমালাই
কুমিল্লা মাতৃভান্ডার রসমালাই
যাই হোক, টেবল অভ কন্টেন্ট কিন্তু স্রেফ সূচী নয়। এটা লিংকিং এবং নেভিগেশনের অন্তর্ভুক্ত।
৩১. যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটার টেবল অভ কন্টেন্ট মূল আরটিকেলের প্রথমদিকে থাক বা না থাক সাইডবারে দিলেন। ওটা হোভার করে থাকবে। ইউজার যেখানেই যাক, সাইডবার শো করবে পুরো পেজের সূচীপত্র। যে সেকশনে সে বর্তমানে আছে সে সেকশনটা হাইলাইটেড হবে। এটা কিন্তু ব্রহ্মাস্ত্র। বাউন্সরেট অনেক অনেক কমে যাবে। ইউজার সুপার নেভিগেশন এক্সপেরিয়েন্স পাবে।
৩২. যদি আসলেই নিজের সাইটে খুব সময় দেন, বা টিমওয়ার্ক করেন, এবং সাইটকে অথরিটি করার ইচ্ছা থাকে, তবে একটা বোমা ব্যবহার করেন না! চ্যাটিঙ অপশন খোলা রাখুন এবং প্রথম মেসেজটা অটোমেটেড করে রাখুন,
যেমন, ‘হাই, আমি দেখলাম তুমি মিনিকেট চালের বিষয়ে খোঁজ খবর করছ, আমি তোমাকে মিনিকেটের বিষয়ে হেল্প করতে পারি’ এবং কিছুক্ষণ পর আরেকটা, ‘তোমাকে মিনিকেটের বিষয়ে মাত্র দুয়েকটা প্রশ্ন করেই বেস্ট সাজেস্ট করতে পারি’। উত্তরগুলো অটোমেটেড করে সাজিয়ে রাখা কোন ব্যাপার না। তবে ভাল হয় যে জবাব দিবে সে একটু আধটু সচল হলে।
৩৩. চরম অবহেলা করে এসেছেন লোগোকে? এবার সেটাকে একটু চেঞ্জ করে নিতে পারেন। স্লাইট। কালার অপটিমাইজেশন, শেইপ অপটিমাইজেশন, ফাইলটাকে একটু ভারি করা- যেন ফেটে না যায়।
৩৪. অনেকের সাইটেই ট্যাবের শুরুতে দেখানোর মত কোনও ইমেজ থাকে না। এতে করে ট্রাফিকের কাছে সাইটকে নির্ভরযোগ্য মনে হয় না। বাউন্সরেট বাড়ে। খোদ লোগো অথবা লোগোর একটা পার্টকে সেটার জন্য ব্যবহার করুন ছোট্ট png ফাইলটার এক্সটেনশন হবে .ico
৩৫. নিজের নিশে (তা সরু হোক আর পুরু) এলোমেলোভাবে আরটিকেল দেয়ার চেয়ে যে বিষয়টা বা সাবনিশ নিয়ে আরটিকেল দিচ্ছেন, সে বিষয়ের আগা পাশ তলা সব কাভার করে নিলেন।
৩৬. নিশের যে বিষয়ে ফোকাস করছেন, সেই সাব নিশে একটা স্কাইস্ক্র্যাপার টেকনিক আরটিকেল তো মাস্ট! এমনকি সেটা যদি পিলার মানি কন্টেন্ট নাও হয়।
৩৭. ইমেজ অপটিমাইজেশনে আমরা ধরা খাই। যেমন, লোগের ইমেজ নেম দেই logo, অল্ট বা অল্টারনেটিভ টেক্সটও দেই logo. অথচ প্রতিটা ইমেজের যদি যথাযথ সংক্ষিপ্ত কিন্তু পরিপূর্ণ নাম থাকতো, তাহলে আমাদের অজান্তেই কিছু ট্রাফিক চলে আসতো। বিশেষ করে এটা রেঙ্কে ইফেক্ট ফেলে। roshmalai.com_logo.png নামটা এভাবে বা আরো ডেসক্রিপটিভ কিন্তু রিডেবল হলে আরো ভাল।
৩৮. ইমেজকে ওয়েব অপটিমাইজ করার বেলায়ও দ্বিতীয়বার ধরা খাই। অথচ ফটোশপ বিশারদ হওয়া লাগে না ওয়েবের জন্য সেইভ করতে ও সঠিক মাপে সেইভ করতে।
৩৯. আমরা সাধারণত পেইজকে ভারি করে ফেলি চারকোণা ইমেজ দিয়ে দিয়ে। ব্যানার শেইপের ইমেজও কিন্তু দেয়া যায় এবং সেটার মধ্য প্রচুর প্রয়োজনীয় ইমেজও ব্যবহার করা যায়।
৪০. আমরা ব্র্যান্ড বিল্ডআপ করার চেষ্টা করি না। নিজেদের ইমেজগুলোয় ব্র্যান্ড লোগে ব্যবহার করতে বাঁধা নেইতো। ট্রাফিক দেখতে দেখতে ব্র্যান্ডে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
৪১. কানাঘুষা জোরদার হয়েছে। আগে যেমন ব্যাড নেইবারহুড রেঙ্ককে প্রভাবিত করতো, এখন আসলেই নাকি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ প্রভাবিত করে। লং টার্ম বিজনেস তো, কিছুটা বাড়তি পয়সা নাহয় গেলো। ফ্লিপ করার সময় পুষিয়ে নেয়া যাবে।
৪২. আমরা সাধারণত মন্তব্য বন্ধ করে রাখি। ভুল। অন্যরা তাদের সাইটের লিংক সহ মন্তব্য করে গেলে সেটাকে স্প্যাম মনে করি। ভুল। সে তার সাইটের লিংক দিয়ে কীইবা এমন রসগোল্লা কামিয়ে নিচ্ছে বা কীবা আমার ক্ষতি করছে? আমি তো রিভিউ না করে কোনও মন্তব্য পাবলিশ করছি না।
দুটাই আদতে আমাদের হেল্প করবে। ওয়ার্ড কাউন্ট বাড়াবে। আর গুগল তো চায় একটা স্ট্যাটিক নন ইন্টারাক্টিভ পেজের বদলে ডায়নামিক ইন্টারাকটিভ পেজ।
যদি মন্তব্যর জবাব দিতে গিয়ে রাইটার হায়ার করতে হবে এই ভয় পান, বড়জোর ‘থ্যাঙ্ক ইউ ফর ইউর সাজেশন’ টাইপ গৎবাঁধা দশটা বাক্য তো সেভ করে রাখতে পারবেন! আর ক্রেডিবিলিটির ইমপ্রেশনটা একবার খেয়াল করুন! যে পাতায় মন্তব্যর চিহ্নে ১০-২০-৩০ লেখা থাকবে, সেটায় ট্রাফিক কতটা কনফিডেন্ট ফিল করবে?
এমন বহু সাইট আছে যেখানে মন্তব্যর জবাব দেয়া হয়না, তবু, মন্তব্যটা তো তার শব্দবৈচিত্র এবং গ্রহণযোগ্যতা বাড়াচ্ছে!
৪৩. অকারণ পাতলা কন্টেন্টের পেইজ হয় বড় করুন নয় অন্য পেইজের সাথে মার্জ করুন নয় নিদেনপক্ষে ফেলেই দিন। কিন্তু রাখবেন না। এটা সাইটের অথরিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সাইটের অথরিটি ২৫%+ রেঙ্কিঙ ফ্যাক্টর।
৪৪. আবার ফিরে আসি ভিডিওর কথায়। ২০২০ সালের মধ্যে মানুষজন ৮০% ক্ষেত্রে আরটিকেলের বদলে ভিডিও দেখবে। এবং বেশিরভাগ মানুষই দেখবে মোবাইল ডিভাইসে। সেগুলোর লেংথও সুইট, অন্তত আমাদের জন্য। ৪ মিনিটের নিচে। পুরনো কন্টেন্টের জিস্ট নিয়ে ভিডিও করুন।
৪৫. সাইটের নামে করা ইউটিউব চ্যানেলে স্লাইডশো টাইপ ভিডিও করুন যদি নিতান্তই না হয়।
৪৬. ভিডিওতে লক্ষ্য রাখবেন, লেখাগুলো যেন বড় হয়, মোবাইল ফ্রেন্ডলি।
৪৭. স্লাইডশোও যদি হয়, কন্ঠটা যেন অন্তত দেয়া হয়। এজন্য খুবই সস্তায় ফ্রিল্যান্সার পাবেন। কারণ কাজটা করাবেন বাল্ক এ। তাকে বলবেন, ২ ঘন্টা কন্ঠ দিতে হবে। কিন্তু ২ ঘন্টায় ভিডিও হবে ৩০ টা আরটিকেলের জন্য ৩০ টা ভিডিও।
পয়সা তাও বেশি লাগবে না, কারণ তাদের খাটুনি বেশি নয়। এবং কোটি কোটি আমেরিকান নারী পুরুষ পড়ে দেয়ার বিনিময়ে প্রায় ‘ফ্রিতে’ ডলার কামাতে অরাজি নয়। এ কাজ করতে তাদের বড়জোর ৪ ঘন্টা লাগবে, কিন্তু ৪ ঘন্টায় তো একটা আরটিকেলও লেখা যায় না।
৪৮. ভিডিওতেও ব্র্যান্ডিং লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্থাৎ লোগো। কল টু অ্যাকশন।
৪৯. ভিডিও’র ফেবু এড মারকেটিং খুবই সফল। কারণ এফেক্টিভ। লেখার চেয়ে শ্রবণযোগ্য শব্দ অনেক গুণ বেশি প্রভাব ফেলে। আর ছবি ফেলে তারচে বেশি। শব্দ ও ছবি যে সবচে বেশি প্রভাব ফেলে, ইয়ে, তার প্রমাণ তো আপনি আমি নিজে! সারাদিন ইউটিউব আর মুভি দেখা- কাজ গেলো গোল্লায়!
৫০. ইউটিউবে আপনি নিশ্চিন্তে প্রচুর অ্যাফিলিয়েট বিক্রি পাচ্ছেন।
৫১. ইউটিউব থেকেও অযাচিত প্রচুর ট্রাফিক পাচ্ছেন সাইটে। অপটিমাইজ ও কল টু অ্যাকশন করাটাই বড় কথা। আর আরটিকেল অপটিমাইজেশনের চেয়ে ভিডিও অপটিমাইজেশন রীতিমত ডালভাত।
শুধু এটুকু আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে, প্রতিদিন ৫০ লাখের কাছাকাছি আরটিকেল পাবলিশ হয় এবং ভবিষ্যত ভিডিওর।
ওরে! হাত ব্যথা হয়ে যাবে তো ভাই! আরো কিছু কথা ছিল, না বলাই রয়ে গেল। শুভেচ্ছা, অপার সম্ভাবনার পথে।